
মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি পৃথক মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সকাল ১০টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁদের একটি সবুজ রঙের প্রিজনভ্যানে তুলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে। শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মক্কেলদের সাবজেলে (উপকারাগার) রাখা হবে।
এর আগে সকাল ৭টার পর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
যাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন—মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলা এবং জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই প্রসিকিউশন তিন মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে।
পরদিন ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন এলপিআরে (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে) রয়েছেন।
এরপর ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, ঢাকা সেনানিবাসের ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর–৫৪’ সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেনা সদর দপ্তরের অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।