
রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে নিহত আবুল কালামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে তার নিজ জন্মভূমি শরীয়তপুরের নড়িয়ায়। সোমবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কবরস্থানে এই তরুণ চাকরিজীবীর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের নিজ বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আত্মীয়স্বজন, সহপাঠী এবং অসংখ্য গ্রামবাসী অংশ নেন। প্রিয়জনের বিদায়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো গ্রামজুড়ে। কেউ অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি, কেউ আবার নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন প্রিয়জনের কফিনের দিকে।
রোববার রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া এলাকার বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা। সেখানে সহকর্মী, প্রতিবেশী ও স্থানীয় শত শত মানুষ অংশ নেন।
নিহত আবুল কালাম আজাদ ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন, যেখানে তিনি বিমানের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন আবুল কালাম।
গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে মেট্রোরেলের একটি ভারী বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পথচারী আবুল কালাম। আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন আশপাশের মানুষ।
দাফন শেষে নিহতের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সন্তানরা এখনো বুঝতে পারেনি তাদের বাবা আর ফিরবে না। ওরা বলে, ‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করোনা।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাব যে, তাদের বাবা আর কখনো জাগবে না! আবুল কালামই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা। এখন আমি আর আমার সন্তানরা দিশেহারা।”
নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন, “আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। পরিবারটির পাশে আমরা আছি, তাদের যে কোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে