
মার্কিন ডলারের বিপরীতে আবারও ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে ভারতীয় রুপি। সোমবার রুপির বিনিময়হার দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ৭৩, যা মাত্র দুই সপ্তাহ আগের ৮৯ দশমিক ৪৯–এর পূর্ববর্তী রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির শক্ত অবস্থান ও শেয়ারবাজারের রেকর্ড উচ্চতা সত্ত্বেও চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল পারফর্ম করা মুদ্রার তালিকায় রয়েছে রুপি। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত হস্তক্ষেপ না থাকলে রুপির পতন আরও বড় হত।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ার সময়েই রুপির এই পতন ঘটছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ, যা রয়টার্সের পূর্বাভাস ৭ দশমিক ৩ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে ব্যাংকাররা বলছেন, এই প্রবৃদ্ধি রুপিকে তেমন শক্তি জোগাতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্যচুক্তিতে অগ্রগতি না থাকা, আমদানিকারকদের হেজিং কার্যক্রম এবং অনুকূল নয় এমন লেনদেন ভারসাম্যের চাপ রুপির দুর্বলতার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সোমবার নন-ডেলিভারেবল ফরোয়ার্ড মার্কেটে পজিশনের মেয়াদপূর্তির চাপেও মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা বাড়ে। এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বেশ কয়েকবার ডলার বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জেপি মর্গানের অর্থনীতিবিদরা এক প্রতিবেদনে বলেন, বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রুপির ‘পরিমিত অবমূল্যায়ন’ একদিকে যেমন অনিবার্য, অন্যদিকে তা বাজার ভারসাম্যের জন্য প্রয়োজনীয়। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা যত বাড়বে, রুপির ওপর চাপও তত বাড়বে—ফলে ভবিষ্যতে আরও দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
গত মাসে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মন্তব্যে ভারতীয় রফতানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমার সম্ভাবনা দেখা দিলেও কোনো বাস্তব অগ্রগতি না হওয়ায় বিষয়টি রুপির বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ফেলেছে।