সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর তারেক রহমান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ফখরুলকে উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে বিকেলে নয়াপল্টনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিলেও তিনি একই কথা জানিয়েছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন ধরে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। রোববার রাতে শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রায় ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছেন।
খালেদা জিয়াকে দেখতে যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আসবেন। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, “যদি ট্রান্সফারেবল মনে হয়, প্রয়োজন পড়ে, এবং মেডিকেল বোর্ড অনুমোদন দেয়, তখন তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়া হবে।”
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া এর আগে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন। চার মাস পর ৬ মে দেশে ফেরেন। লন্ডনে প্রথমে হাসপাতালে এবং পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করতেন।
২০০৮ সালে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তারেক রহমান এক–এগারো পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে যান এবং বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করছেন। গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন মামলায় তারেকের সাজার রায় বাতিল হওয়ার পর দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়। তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও জানানো হয়নি।
খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হওয়ার পর শোনা যাচ্ছিল, তারেক দ্রুত দেশে ফিরবেন। এ বিষয়ে তিনি লন্ডন থেকে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মায়ের স্নেহ–স্পর্শ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আছে, তবে রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে একক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটবে।’
সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার বলা হয়েছে, তারেক রহমান দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, দেশে ফিরতে চাইলে এক দিনের মধ্যে ট্রাভেল পাস দেওয়া হবে। নিরাপত্তা বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশে কারও কোনো নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি নেই। সরকার সবাইকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
