শরিকদের ক্ষোভ ও হতাশার মধ্যেই বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের সঙ্গে ‘আসন সমঝোতা’ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির গুলশানের কার্যালয়ে ছয়-দলীয় মোর্চা গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে আলোচনায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির নেতা সাইফুল হক সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আলোচনা অসমাপ্ত রেখে বের হন।
সাইফুল হক এবং দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির পক্ষে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিন নেতা। আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল জোটের মনোনয়ন সংক্রান্ত সমঝোতা। সূত্র জানিয়েছে, সাইফুল হক ঢাকা-৮ আসনে (মতিঝিল-পল্টন-শাহজাহানপুর-শাহবাগ ও রমনা) নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। সম্ভাবনা না হলে তিনি ঢাকা-১২ আসনে (তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল-হাতিরঝিল-শেরেবাংলা নগর আংশিক) নির্বাচন করতে চান।
বৈঠকে বিএনপি জানান, তারা বিষয়গুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তবে মনোনয়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। সাইফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, “বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, সেখান থেকে যদি বিএনপি সরে আসে, সেটার দায়দায়িত্ব বিএনপির।”
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বৈঠকের সময় সাইফুল হক বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যদি বিএনপি মিত্র দলগুলোর মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা না করে, তবে রাজনৈতিক সম্পর্ক শেষ করার ইঙ্গিত দিতে পারেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম জানান, “আমরা কোনো দলের সঙ্গে বৈঠক করছি না, ব্যক্তিপর্যায়ে কথা বলছি। আলোচনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।”
এদিকে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করেছেন।
বর্তমানে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলো নিজস্ব বৈঠকে বসেছে। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণ-অধিকার পরিষদ ও নেজামে ইসলাম পার্টির নেতারা বিকেলে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে বৈঠক করে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা এবং করণীয় বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন।
