কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের তিন পাশের দেয়ালে আঁকা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রাফিতি হঠাৎ মুছে ফেলে সেখানে আলপনা আঁকার ঘটনায় তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (গতকাল) জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই আলপনা আঁকা হয়, যা দেখতে বিয়েবাড়ি বা বৈশাখী উৎসবের নকশার মতো ছিল।
সন্ধ্যার আগে পথচারীদের নজরে এলে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ও ছবি প্রকাশের পর স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সমালোচনার মুখে সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলপনা দ্রুত মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে রাতের মধ্যেই আলপনা অপসারণ করা হয়।
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, শহীদ মিনার কোনো উদ্যাপনস্থল নয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, এখানে প্রাসঙ্গিক ও মর্যাদাপূর্ণ উপস্থাপনাই হওয়া উচিত। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দীন হাবিব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিটি প্রজন্মের গৌরব। সাজসজ্জার ক্ষেত্রে সেই ইতিহাসকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু উল্টো পরিবেশকে দৃষ্টিকটু করা হয়েছে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, শহীদ মিনারে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন মুছে বৈশাখী বা বিয়েবাড়ির আলপনা আঁকা মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবমাননার শামিল। জেলা প্রশাসকের দ্রুত পদক্ষেপে মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক ও বিতর্কিত। তাই দ্রুত আলপনা মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
