ঢাকা, ৯ নভেম্বর ২০২৫:
সংস্কার ও জুলাই সনদ নিয়ে দীর্ঘ আট মাসের আলোচনার পর রাজনৈতিক দলগুলো ফের রাজপথমুখী হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এমনকি নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগও এখন রাজপথে সক্রিয় কর্মসূচি নিচ্ছে। ফলে নভেম্বর মাসের শুরুতেই রাজনীতিতে ফিরেছে পুরোনো উত্তাপ।
বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ৭ নভেম্বর ব্যাপক শোভাযাত্রা করেছে, যেখানে নির্বাচনী আমেজ স্পষ্ট ছিল। দলটি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় বিশাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে তারা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজনের দাবি জানাবে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থেকেই এই রাজপথমুখিতা। সরকার বলেছে, সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছাক। কিন্তু সংলাপের বদলে রাজপথে নেমেছে সবাই।
এর মধ্যে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে, দলটির পতিত শাসক শেখ হাসিনা ও অন্যদের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। এতে রাজধানীতে সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বিএনপি ও জামায়াতের ভিন্ন অবস্থান আওয়ামী লীগকে সুযোগ দিতে পারে, তবে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাই নভেম্বরকে রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর সময় করে তুলেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায়, তাহলে কী হবে—সংঘর্ষ হবেই।”
অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “বিএনপি এখন এমন আচরণ করছে, যা আগের শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে যায়। আমরা চাই রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় ফিরুক।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ৭, ১১ ও ১৩ নভেম্বরের ধারাবাহিক কর্মসূচি রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। দলগুলো চাইছে নিজেদের দাবি আদায়ে শক্তি প্রদর্শন করতে, তবে নির্বাচনের আগে সংঘর্ষের ঝুঁকি নিয়েও শঙ্কা বাড়ছে।
সব মিলিয়ে নভেম্বরের রাজনীতি এখন দুই দিকেই ঝুঁকছে—একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে রাস্তায় প্রভাব দেখানোর প্রতিযোগিতা।
Jatio Khobor