লেখক: কৃষ্ণা দেবনাথ | প্রকাশ: ৯ নভেম্বর ২০২৫
পারিবারিক জীবনে নারীকে সন্তান বা নারী হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু রাষ্ট্রীয় জীবনে সংবিধান তাকে ‘ব্যক্তি’ বা নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পরিবারের আচরণ, ধর্মীয় আইন এবং সামাজিক ধ্যানধারণা থেকে শুরু করে জন্মলগ্ন থেকেই নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, মুসলিম বা হিন্দু কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে সম্পত্তি অধিকার পুরুষ সন্তানের সমান নয়।
সংবিধানের আর্টিকেল ২৭, ২৮ এবং ২৯ অনুযায়ী নারীর রাষ্ট্রীয় অধিকার সমান। তবু আর্টিকেল ৪১–এর ধর্মীয় স্বাধীনতা পারিবারিক আইনের মাধ্যমে নারীর সমানাধিকার সীমিত করে। এই দ্বৈততা পারিবারিক ও কর্মজীবনে বৈষম্যের মূল কারণ।
কর্মজীবনে নারীরা রাষ্ট্রীয় অধিকার পেয়ে উন্নতি করলেও, পরিবারে মানসিক ও সামাজিক বৈষম্যের কারণে তাদের কাজের শুরু দেরিতে হয়। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং অন্যান্য পেশায় নারীর অংশগ্রহণ ইতিবাচক হলেও এখনও কম। উদাহরণস্বরূপ, প্রশাসন ক্যাডারে নারীর সংখ্যা ৩১ শতাংশ, সচিব পর্যায়ে মাত্র ১৩ জন নারী কর্মকর্তা।
রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণও সীমিত। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নগণ্যসংখ্যক নারী সংসদ সদস্য আছেন, অধিকাংশ নারী মনোনীত। তাই পারিবারিক বৈষম্য দূর না করলে এবং পুরুষ সহকর্মী যদি সমর্থন না করে, নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন অর্জন কঠিন।
নিবন্ধের মূল বক্তব্য: দৃশ্যমান বৈষম্য সহজে শনাক্ত করা যায়, কিন্তু অদৃশ্য বৈষম্য চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করার জন্য শিক্ষা, সচেতনতা ও সহমর্মিতা প্রয়োজন। পরিবার ও রাষ্ট্রের মধ্যে নারীর ‘ব্যক্তি’ হিসেবে স্বীকৃতি নিশ্চিত করাই নারীর ক্ষমতায়নের মূল ভিত্তি।
Jatio Khobor