আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইর দল লা লিবার্টেড অ্যাভাঞ্জা (এলএলএ) গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে বিপুল জয় পেয়েছে। এই জয় যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত ডানপন্থী এ নেতার জন্য তাঁর সংস্কার কর্মসূচি আরও জোরদারভাবে বাস্তবায়নের পথ খুলে দিয়েছে।
রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আর্জেন্টিনার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের মোট আসনের এক–তৃতীয়াংশ এবং নিম্নকক্ষ চেম্বার অব ডেপুটির মোট আসনের অর্ধেক নিয়ে ভোট হয়। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা শেষে দেখা গেছে, মিলেইর নেতৃত্বাধীন এলএলএ দল পেয়েছে ৪০ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্য–বামপন্থী পেরোনিস্ট মুভমেন্ট পেয়েছে ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশ ভোট।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনেটের ২৪টি আসনের মধ্যে এলএলএ জয় পেয়েছে ১৩টিতে এবং চেম্বার অব ডেপুটির ১২৭টি আসনের মধ্যে ৬৪টিতে। এই সাফল্য প্রেসিডেন্ট মিলেইর রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে, যদিও কংগ্রেসে আইন পাস করার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাঁর দলের নেই। ফলে আইন পাসে তাঁকে মধ্য–ডানপন্থী দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করতে হবে।
নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর মিলেইর দল এলএলএর নেতাকর্মীরা রাজধানীতে আনন্দ উদ্যাপন করেন। তাঁরা স্লোগান দেন, একে অপরকে আলিঙ্গন করেন, এমনকি কেউ কেউ খুশিতে অশ্রু ঝরান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দলটির মুখপাত্র ম্যানুয়েল আদোরনি লেখেন, “আর্জেন্টিনার মঙ্গল হোক।”
দুই বছর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় মিলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আর্জেন্টিনার অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি সাহসী সংস্কার আনবেন। মধ্যবর্তী নির্বাচন ছিল তাঁর নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থার প্রথম বড় পরীক্ষা।
নির্বাচনের আগেই আর্জেন্টিনার মুদ্রা পেসোর মান অস্থির হয়ে পড়ে, যার ফলে মিলেই তাঁর মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি পান। তবে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়েছিলেন—যদি নির্বাচনের ফল মিলেইর বিপক্ষে যায়, তবে সেই সহায়তা আর দেওয়া হবে না।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী সময় থেকে আর্জেন্টিনায় পেরোনিস্ট মুভমেন্টের রাজনৈতিক আধিপত্য ছিল। কিন্তু দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে তাদের জনপ্রিয়তা ক্রমেই কমে যায়। এবারের নির্বাচনে মিলেইর জয়ে সেই দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ভেঙে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।
Jatio Khobor