ঢাকা | বঙ্গাব্দ

হাদির ওপর হামলার পর বিএনপি–জামায়াত–এনসিপিকে ঐক্যের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Dec 13, 2025 ইং
হাদির ওপর হামলার পর বিএনপি–জামায়াত–এনসিপিকে ঐক্যের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের ছবির ক্যাপশন: হাদির ওপর হামলার পর বিএনপি–জামায়াত–এনসিপিকে ঐক্যের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের
ad728

জুলাই অভ্যুত্থানের মুখ হিসেবে পরিচিত শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত শক্তি পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। এ সময় তিন দলের নেতারা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ভুলে এক থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে আলোচনার বিষয়বস্তু জানানো হয়। এর আগে তিনি ওসমান হাদির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সড়কে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।

এই ঘটনার পর নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবেরও বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা একটি পূর্বপরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এটি একটি ‘সিম্বলিক’ আক্রমণ। তাঁর ভাষায়, প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এবং প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন বন্ধ করা এবং পুরো প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়া।

সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তা থেকে সরে আসতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু হিসেবে দেখা বা আক্রমণের সংস্কৃতি পরিহার করতে হবে। নির্বাচনকালীন উত্তেজনা যেন নিয়ন্ত্রিত থাকে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হলেই পতিত আওয়ামী লীগ শক্তি সঞ্চয় করেছে। তাই দলীয় স্বার্থের পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া দলগুলোর নেতারা ঐক্য ধরে রাখার অঙ্গীকার করেন। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং জাতি ও জুলাইয়ের স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের পরামর্শ দেন তিনি।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতার কারণে বিরোধীরা সুযোগ পাচ্ছে। ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে বিভাজন না বাড়িয়ে সবাইকে পূর্বের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানকে অপরাধ হিসেবে তুলে ধরার জন্য মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে ‘নরমালাইজড’ করার নানা চেষ্টা চলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর মতে, নিজেদের মধ্যে অনৈক্য থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা সেটিকে পরাজয় হিসেবে দেখবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক শক্তিগুলো নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাই কার্যকর হবে না।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jatio Khobor

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
হাওরের প্রকল্প স্থগিত

হাওরের প্রকল্প স্থগিত