ঢাকা | বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির বড় হুমকি, বিশ্বব্যাংকের সমাধান প্রস্তাব

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Dec 18, 2025 ইং
দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির বড় হুমকি, বিশ্বব্যাংকের সমাধান প্রস্তাব ছবির ক্যাপশন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির বড় হুমকি, বিশ্বব্যাংকের সমাধান প্রস্তাব
ad728

দক্ষিণ এশিয়ার ইন্দো–গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি–এইচএফ) অঞ্চলে বায়ুদূষণ স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতায় বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনছে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানসহ এ অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে, যার ফলে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যু হচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে আঞ্চলিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১০ শতাংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদন ‘A Breath of Change: Solutions for Cleaner Air in the Indo–Gangetic Plains and Himalayan Foothills’ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন খাত ও প্রশাসনিক পর্যায়ে একযোগে উদ্যোগ নেওয়া গেলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে। এতে জনস্বাস্থ্যের উন্নতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী হবে।

প্রতিবেদনে এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের মূল পাঁচটি উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে:

  1. রান্না ও গরমের জন্য ঘরে কঠিন জ্বালানি পোড়ানো।

  2. যথাযথ ফিল্টার প্রযুক্তি ছাড়া শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি ও বায়োমাসের অদক্ষ ব্যবহার।

  3. অকার্যকর অভ্যন্তরীণ দহন ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের ব্যবহার।

  4. কৃষিতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং সার ও পশুবর্জ্য অদক্ষভাবে ব্যবস্থাপনা।

  5. ঘর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পোড়ানো।

সমাধানের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎচালিত রান্নাব্যবস্থা, শিল্পকারখানার বয়লার ও ভাটার আধুনিকীকরণ ও বিদ্যুতায়ন, অ-মোটরচালিত ও বৈদ্যুতিক পরিবহন, উন্নত বর্জ্য ও পশুবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও নিরাপদ বর্জ্য নিষ্পত্তি।

প্রতিবেদন তিনটি মূল স্তরে সমাধানের কথা উল্লেখ করেছে:

  1. উৎস পর্যায়ে নির্গমন কমানোর উদ্যোগ।

  2. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা।

  3. শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, নীতিনির্ধারণী কাঠামো, বাজারভিত্তিক উপকরণ এবং আঞ্চলিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে অগ্রগতি বজায় রাখা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, “সমাধান হাতের নাগালেই আছে। সমন্বিত, বাস্তবসম্মত ও প্রমাণভিত্তিক উদ্যোগ বড় পরিসরে বাস্তবায়নের কার্যকর রূপরেখা দিচ্ছে। ব্যবসা, পরিবার ও কৃষকদের জন্য পরিষ্কার প্রযুক্তি গ্রহণে শক্তিশালী অর্থনৈতিক যুক্তি রয়েছে।”

প্রতিবেদন দেশের জন্য চারটি ‘আই’ প্রস্তাব করছে:

  • তথ্য (Information): পরিকল্পনা ও জবাবদিহির জন্য নির্ভরযোগ্য উপাত্ত।

  • প্রণোদনা (Incentives): মানুষ ও বিনিয়োগকে পরিষ্কার বিকল্পের দিকে উৎসাহিত করা।

  • প্রতিষ্ঠান (Institutions): সমন্বিত পদক্ষেপ, আইন মানা এবং বাস্তবায়নের সংযোগ।

  • অবকাঠামো (Infrastructure): পরিষ্কার জ্বালানি, পরিবহন ও বর্জ্য ব্যবস্থাসহ আধুনিক শিল্প কার্যক্রম নিশ্চিত করা।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশ বিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, “পরিচ্ছন্ন বায়ু অর্জনের জন্য ধারাবাহিক সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন এবং শক্ত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সরকারগুলো একসাথে কাজ করলে দূষণ কমানো, লাখো প্রাণ বাঁচানো এবং সবার জন্য পরিষ্কার বাতাস নিশ্চিত করা সম্ভব।”


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jatio Khobor

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
চট্টগ্রাম বন্দর: আমাদের সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসটি...

চট্টগ্রাম বন্দর: আমাদের সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসটি...