মস্তিষ্কের বয়স বেড়ে যায় পাঁচ ধাপে, প্রতিটি ধাপে মানুষের কী পরিবর্তন হয়
মানুষের মস্তিষ্ক জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ধাপে ধাপে পরিবর্তিত হয়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখেছেন, মস্তিষ্কের বয়স পাঁচটি মূল ধাপে বৃদ্ধি পায়। এই ধাপগুলো হলো: শৈশব, কৈশোর, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা, বার্ধক্যের শুরু ও বার্ধক্যের শেষ ভাগ।
গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের বয়স ত্রিশ বছরের কোঠার শুরু পর্যন্ত কৈশোরে থাকে। এটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কেন ভিন্ন ভিন্ন হয় তা বোঝার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।
মস্তিষ্কের বয়সের পাঁচ ধাপ
-
শৈশব (জন্ম–৯ বছর)
এই সময়ে মস্তিষ্ক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। শুরুতে তৈরি হওয়া স্নায়ুকোষের সংযোগ বা সাইন্যাপসগুলোর অতিরিক্ত অংশ কমতে থাকে। মস্তিষ্ক কার্যকারিতায় শিশুর মতো থাকে—উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো বা নতুন জায়গায় কৌতূহল প্রকাশ করা। -
কৈশোর (৯–৩২ বছর)
কৈশোরে মস্তিষ্কের কোষের সংযোগ দক্ষতার উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। যদিও এটি বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধির সময়, একই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা শুরু হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। গবেষকরা দেখেছেন, আমরা আগে ধারণা করতাম কৈশোর ১৯ বছর পর্যন্ত থাকে, কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে এটি ৩০ বছর পর্যন্ত থাকে। -
প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা (৩২–৬৬ বছর)
এই দীর্ঘতম ধাপে মস্তিষ্কে পরিবর্তন ধীরে ঘটে। এ সময় বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্ব একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকে। -
বার্ধক্যের শুরু (৬৬–৮৩ বছর)
মস্তিষ্কের কোষের সংযোগে পরিবর্তন আসে, পুরো মস্তিষ্ক একসাথে কাজ করার বদলে অংশভাগে কাজ করে। যদিও এই সময়ে মস্তিষ্ক সুস্থ মনে হলেও ডিমেনশিয়া ও উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। -
বার্ধক্যের শেষ ভাগ (৮৩ বছর এবং তার পরে)
শেষ ধাপেও একই ধরনের পরিবর্তন হয়, তবে আরও স্পষ্টভাবে। মস্তিষ্কের এই বয়সের সঙ্গে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন যেমন বয়ঃসন্ধি, মাতৃত্ব-পিতৃত্ব ও স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
গবেষকরা বলেন, মস্তিষ্কের বয়স এবং জীবনের ধাপগুলোর সম্পর্ক বোঝা মানসিক স্বাস্থ্য এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
Jatio Khobor