জুলাই–আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রায় ঘোষণার তারিখ আগামী ১৩ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল প্যানেল দুপুর সোয়া ১২টায় রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী যুক্তি উপস্থাপন করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, হত্যাযজ্ঞটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামির দোষ প্রমাণিত না হলে শহীদ ও আহতরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
ট্রায়াল সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট থেকে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও ৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে তিন দিনের যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২২ অক্টোবর।
রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দাবি করেন, সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হয়ে দায়মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি আরও বলেন, আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা কোনো মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি এবং প্রসিকিউশন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করে শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধে কোনো সাজার আবেদন করা হয়নি।
মামলায় মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চিফ প্রসিকিউটর ও অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁদের সমাপনী বক্তব্য শেষ করেন, এরপর ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের তারিখ ঘোষণা করে। প্রসিকিউশনের ধারণা, রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে। মানবতাবিরোধী পাঁচটি অভিযোগে মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার নথি রয়েছে, যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা ২,৭২৪ পৃষ্ঠা।
Jatio Khobor