ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে অবৈধ পথে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গ্রেপ্তার দুজন হলেন সিবিয়ন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশীতা ইসলামের আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার দুপুরে মতিঝিল এলাকায় প্রচার শেষ করে ফেরার পথে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, ঘটনার দিন মোটরসাইকেলের পেছন থেকে ফয়সাল করিম মাসুদ ওসমান হাদিকে গুলি করেন। এরপর তিনি ওই মোটরসাইকেলেই আগারগাঁওয়ে তাঁর বোনের বাসায় যান। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বের হন। মোটরসাইকেলচালক আলমগীর শেখ তাঁর সঙ্গে ছিলেন। দুজনই ওই রাতেই সড়কপথে ময়মনসিংহ হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে যান।
অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারে সহযোগিতার অভিযোগে পুলিশ সিবিয়ন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে গ্রেপ্তার করে। আজ দুপুরে তাঁদের ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহম্মেদ আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।
রিমান্ড আবেদনে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের অবৈধ পথে ভারতে পালাতে সহায়তা করেছেন—এমন তথ্য সাক্ষ্যপ্রমাণ ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে। সিবিয়ন দিউ হালুয়াঘাট ও ধোবাউরা উপজেলার সাবেক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জুয়েল আড়েংয়ের ভাগনে। পুলিশের দাবি, তিনি আগে থেকেই হালুয়াঘাট, ধোবাউরা ও শেরপুর এলাকায় অবৈধভাবে লোকজন ও মালামাল পারাপারের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে কার পরিকল্পনা ও পরামর্শে সীমান্ত পারাপার ঘটানো হয়েছে, তা জানার পাশাপাশি ওসমান হাদির ওপর হামলার পরিকল্পনাকারী ও জড়িত অন্যদের শনাক্ত করা, ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার এবং হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত অর্থদাতা ও মদদদাতাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। সে কারণেই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
Jatio Khobor