বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি)-এর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘মহাকালের মহানায়ক শহীদ জিয়া’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “কোনো কোনো রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে যাতে নির্বাচন পেছানো হয়, নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হয়।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার এই প্রয়াস ঠিক নয়। এখন প্রয়োজন দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও শিক্ষা—সবকিছুই নির্ভর করছে একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর।”
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারকাজের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “স্বল্প সময়ের মধ্যেই তারা কিছু সংস্কার সম্পন্ন করতে পেরেছে, যা ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখার প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর গঠন—এসবই বিএনপির অবদান।”
তিনি আরও বলেন, “আজ এমনভাবে কথা বলা হয় যেন বিএনপি ভিলেন। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে যত উন্নয়ন, যত ভালো কাজ হয়েছে, সবই বিএনপির নেতৃত্বে হয়েছে—জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার হাত ধরে হয়েছে। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা লেখেন, তা শুনে কষ্ট হয়। সত্যটা বলা উচিত।”
জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “তাঁর নাম ও মাজার মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস তাঁকে ধারণ করেছে—তাঁকে মুছে ফেলা যাবে না।”
খালেদা জিয়ার চীন সফরের স্মৃতি স্মরণ করে ফখরুল বলেন, “তখন চীনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের হাত ধরে বলেছিলেন, ‘ক্যারি দ্য ফ্ল্যাগ অব ইয়োর ফাদার অ্যান্ড মাদার।’ আজ তারেক রহমান সেই পতাকা তুলে ধরেছেন—যে পতাকা স্বাধীনতা, অধিকার, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের প্রতীক।”
বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এই দেশের গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করব, আরও বিকশিত করব এবং অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক ধারায় রূপান্তর করব।”
৬৪০ পৃষ্ঠার নতুন এই সংকলিত গ্রন্থে রয়েছে ১৩টি অধ্যায়। এর একটি অধ্যায়ে তারেক রহমানের লেখা ‘আমার বাবা’ শিরোনামের নিবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন এবং বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল প্রমুখ।
Jatio Khobor