ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সহিংসতা উসকানি ও নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টার অভিযোগে মেটাকে চিঠি অন্তর্বর্তী সরকারের

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Dec 20, 2025 ইং
সহিংসতা উসকানি ও নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টার অভিযোগে মেটাকে চিঠি অন্তর্বর্তী সরকারের ছবির ক্যাপশন: সহিংসতা উসকানি ও নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টার অভিযোগে মেটাকে চিঠি অন্তর্বর্তী সরকারের
ad728

ফেসবুকের মাধ্যমে সহিংসতা উসকে দেওয়া, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে (ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান) চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি গতকাল শুক্রবার এ চিঠি পাঠায়।

চিঠিতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ–সংক্রান্ত কনটেন্টের ওপর বিশেষ নজরদারি জোরদার করতে মেটার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি জানায়, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মকে সহিংসতা উসকে দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বাস্তব জীবনে সহিংসতার রূপ নিচ্ছে। এর ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চিঠিতে সাম্প্রতিক সহিংসতার উদাহরণ হিসেবে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে তাঁকে মাথায় গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।

ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই রাতেই ঢাকায় প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার এবং ছায়ানট ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সরকার মনে করছে, এসব ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সহিংসতা ছড়ানোর ধারাবাহিকতার অংশ।

চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ফেসবুকে প্রকাশ্যে ওসমান হাদির মৃত্যুকে সমর্থন করেছেন। অন্যরা গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব পোস্ট ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা হয়, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।

জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির অভিযোগ, সরকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হলেও সহিংসতা উসকে দেওয়া এসব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে মেটা কার্যকর সহযোগিতা করেনি।

চিঠিতে পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে মেটার কাছে কয়েকটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ–সংক্রান্ত কনটেন্টে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড কঠোরভাবে ও দ্রুত প্রয়োগ, বাংলা ভাষাভিত্তিক কনটেন্ট মডারেশন জোরদার, অনুভূতি বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা বৃদ্ধি এবং সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সংগঠিত ক্ষতির আহ্বান জানানো পোস্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বান জানানো যেকোনো পোস্ট সরাসরি রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে জানান, জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি আজ শনিবার থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৩০৮৩৩২৫৯২) ও ই–মেইল (notify@ncsa.gov.bd)–এর মাধ্যমে সরাসরি অভিযোগ গ্রহণ করবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jatio Khobor

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আমরা যেন সাংবিধানিক ও আইনের বাইরে না য

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আমরা যেন সাংবিধানিক ও আইনের বাইরে না য