ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সন্তানদের নিয়ে দ্বন্দ্ব: গ্রেপ্তার আতঙ্কে দুবাই শাসক পরিবারের সাবেক পুত্রবধূ জয়নাব জাভাদলি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Nov 26, 2025 ইং
সন্তানদের নিয়ে দ্বন্দ্ব: গ্রেপ্তার আতঙ্কে দুবাই শাসক পরিবারের সাবেক পুত্রবধূ জয়নাব জাভাদলি ছবির ক্যাপশন: দুবাইয়ের শাসক পরিবারের সদস্য শেখ সাঈদের সাবেক স্ত্রী জয়নাব জাভাদলি—ছবি: বিবিসির এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে
ad728

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে শাসক পরিবারের সদস্য শেখ সাঈদ বিন মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুমের সাবেক স্ত্রী জয়নাব জাভাদলি জানিয়েছেন, তিনি যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন। সাবেক স্বামী তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশের কাছে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছেন—অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়নাব তাঁদের তিন মেয়েকে অপহরণ করেছেন।

শেখ সাঈদ দুবাইয়ের শাসকের ভাইয়ের ছেলে। ২০১৯ সালে বিচ্ছেদের পর থেকেই তাঁদের তিন সন্তানের হেফাজত নিয়ে সাবেক দম্পতির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। গত কয়েক সপ্তাহে এই বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে—কখনো সন্তানরা মায়ের কাছে, কখনো বাবার কাছেই ছিল। উভয়েই একে অপরের বিরুদ্ধে সন্তানদের অপহরণের অভিযোগ তুলেছেন।

সম্প্রতি অনলাইনে এসে সরাসরি অভিযোগ তোলার কারণে জয়নাব সাইবার অপরাধের অভিযোগেও গ্রেপ্তার হতে পারেন। ব্রিটিশ আইনজীবী ডেভিড হেইকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় জয়নাব বলেন, ঝুঁকি জেনেও তিনি লাইভে এসে সাহায্য চেয়েছিলেন। তাঁর মতে, ‘এটাই ছিল আমার শেষ সুযোগ, কারণ তাঁরা আর আমাকে মেয়েদের দেখতে দিতেন না।’

জয়নাব দাবি করছেন, দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে ২০২২ সালে করা এক চুক্তির মাধ্যমে তিনি মেয়েদের ১৮ বছর পর্যন্ত হেফাজতে রাখার অনুমতি পেয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, তাঁর বসবাসের জন্য একটি বাড়ি বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সহায়তার ব্যবস্থা ছিল। মেয়েদের স্কুলের খরচ বহন করার কথা ছিল তাঁদের বাবার। তবে বিনিময়ে তাঁকে গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য না করা এবং সরাসরি প্রচার না করার শর্তে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।

পরে আদালত সন্তানদের হেফাজত শেখ সাঈদের কাছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু জয়নাব বলেন, তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে এই সিদ্ধান্তে আগের চুক্তির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। দুই মাস আগ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।

হঠাৎ একদিন সন্তানদের নিয়মিত সাক্ষাতের সময় জয়নাব দুবাই পুলিশের মাধ্যমে সাবেক স্বামীর পাঠানো বার্তা পান—সন্তানরা সেদিন তাঁর সঙ্গে যাবে না। এরপর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর সঙ্গে সন্তানদের কোনো যোগাযোগ হয়নি। পরে শিশুসুরক্ষা কেন্দ্রে তিন ঘণ্টার জন্য সাক্ষাতের সুযোগ পান। কিন্তু সেখানে গিয়ে সন্তানদের না দেখে হতবাক হন তিনি। ভবন থেকে বের হওয়ার সময় মেয়েরা তাঁর দিকে দৌড়ে আসে। তারা কাঁদতে কাঁদতে বলছিল, ‘মা, আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাও।’

জয়নাব গাড়িতে তুলে দ্রুত চলে যেতে চাইলে তাঁর দাবি, সাবেক স্বামীর কর্মীরা তাঁদের গাড়ি আটকে দেয়। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন লাইভস্ট্রিমে এসে সাহায্য চাইবেন। তিনি বুঝেছিলেন, এতে আমিরাত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর করা চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ উঠবে এবং গ্রেপ্তারের ঝুঁকি তৈরি হবে। তবুও তাঁর মতে, সন্তানদের পাশে থাকার এটিই ছিল একমাত্র উপায়।

জয়নাব বর্তমানে মেয়েদের নিয়ে নিজের বাসায় অবস্থান করছেন। গ্রেপ্তার হতে পারেন—এই আশঙ্কায় তিনি বাইরে বের হতেও সাহস পাচ্ছেন না। তাঁর তিন মেয়ের বয়স—নয়, সাত ও ছয়।

এ বিষয়ে বিবিসি বেশ কয়েকজন আমিরাতি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। আদালতের নথি অনুযায়ী, শেখ সাঈদের অভিযোগ হলো—জয়নাব তাঁর চালকের সহায়তায় জোর করে সন্তানদের গাড়িতে তুলে অপহরণ করেছেন এবং অনলাইনে ভিডিও পোস্ট করে মানহানি, রাষ্ট্রের অবমাননা ও আইন লঙ্ঘন করেছেন।




নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jatio Khobor

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারি করলো এমপিও নীতিমালা-২০২৫

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারি করলো এমপিও নীতিমালা-২০২৫